শনিবার, ১৫ মার্চ ২০২৫, ০২:৪২ পূর্বাহ্ন
অনলাইন ডেস্ক: ফেসবুকে নিজেকে সুন্দরী নারী হিসেবে উপস্থাপন করে প্রেমের ফাঁদে ফেলতেন উচ্চবিত্ত মধ্যবয়সীদের। এরপর চতুর কৌশলে তাদের কাছ থেকে নিজেদের গোপনীয় ছবি ও ভিডিওর বায়না ধরতেন। এ ধরনের নথি হাতে আসার পর হাতিয়ে নিতেন টাকা। না হলে ফাঁস করে দিতেন তা। এমনই এক প্রতারক ‘প্রেমিকা’ পুরুষকে গ্রেপ্তার করেছে গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম। এরশাদ মিয়া নামের এই প্রতারককে গ্রেপ্তারের কথা আজ রবিবার জানিয়েছে পুলিশ। তাকে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে রাজধানীর হাতিঝিল থানায় সোপর্দ করা হয়েছে। ডিবি জানায়, সম্প্রতি দেশের একটি বড় প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন একজন কর্মকর্তা শিকার হন এরশাদ মিয়ার প্রেমের ফাঁদে। হারিয়েছেন বহু টাকা। তার কাছে আরো টাকা দাবি করেও না পেয়ে এরশাদ মিয়া নিজের কাছে থাকা ছবি ও ভিডিও প্রকাশ করে দেন ফেসবুকে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী মামলা করেন হাতিরঝিল থানায়। গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগের ফাইন্যানশিয়াল টিম তদন্তে নামলে বেরিয়ে আসে সুনামগঞ্জের একটি কলেজের ডিগ্রির শিক্ষার্থী এরশাদ মিয়ার অভিনব প্রতারণার চিত্র।
ডিবির সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগের ফাইন্যানশিয়াল টিমের সহকারী পুলিশ কমিশনার (এডিসি) মাহিদুল ইসলাম ঢাকা টাইমসকে বলেন, ফেসবুকে নতুন নতুন আইডি খুলে সমাজের উচ্চবিত্ত ও প্রতিষ্ঠিত ৪০-৫০ উর্ধ্ব বয়সী ব্যক্তিদের ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠাত এরশাদ। আবেদন গ্রহণ হওয়ার পর টার্গেটকৃত ব্যক্তির সঙ্গে শুরু হতো আলাপন। আদান-প্রদান করা হতো একান্ত ব্যক্তিগত ছবি। অন্যের ছবি দিয়ে নিজেকে আকর্ষণীয় নারী হিসেবে উপস্থাপন করতেন এরশাদ মিয়া। আর মোবাইল ফোনের ভয়েসের বিশেষ কৌশল ব্যবহার করে কথা বলতেন নারীকণ্ঠে। প্রযুক্তিজ্ঞানে দক্ষ এরশাদ মিয়া এভাবে প্রেমের জালে আটকে ফেলতেন সমাজে প্রতিষ্ঠিত ব্যক্তিদের। প্রেমের সম্পর্ক গভীর করতে ইন্টারনেট থেকে অন্য নারীর নগ্ন ছবি সংগ্রহ করে সেগুলো পাঠাতেন ‘প্রেমিক ব্যক্তি’দের কাছে। এরপর তাদের কাছ থেকে সংগ্রহ করতেন একান্ত ব্যক্তিগত ছবি ও ভিডিও। এগুলো ব্যবহার করে নানাভাবে হাতিয়ে নিতেন লাখ লাখ টাকা। চাহিদামতো টাকা না পেলে পরিবারের সদস্যদের কাছে ছবি পাঠানোর পাশাপাশি প্রকাশ করে দিতেন ফেসবুকে। এভাবে ১৫-২০ জন তার প্রতারণার শিকার হয়েছে।
গোয়েন্দা পুলিশের কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘আমরা একজন নারী প্রতারক হিসেবে ধারণা করে তাকে গ্রেপ্তার করতে গিয়েছিলাম। কিন্তু ঘটনাস্থলে গিয়ে অবাক হই। প্রতারক মানুষটি কোনো নারী নয়। এরশাদ মিয়া নিজেকে নারী হিসেবে ফেসবুকে উপস্থাপন করত। সে গুগল থেকে অন্য নারীদের খোলামেলা ছবি সংগ্রহ করে সেগুলো ব্যবহার করত।’